Code

Drop Down MenusCSS Drop Down MenuPure CSS Dropdown Menu

Second Header

Drop Down MenusCSS Drop Down MenuPure CSS Dropdown Menu

Wednesday, March 23, 2016

উড়োচিঠি


কেমন আছিস তুই?নিশ্চয় অবাক হয়ে গেছিস। ভাবছিস হঠাৎ করে তোকে চিঠি লেখার ইচ্ছে হল কেন? এতক্ষণে নিশ্চয় তোর আনমনা আঙ্গুল, গালের পাশে এলিয়ে আসা চুলের লতিতে পাক দিচ্ছে, অথবা ভাবুক হয়ে খুঁজে নিয়েছে তোর ঠোঁট-একবার সময়ের পরতে হাত বুলিয়ে নেবার জন্য। অথবা অবাক চোখে দেখছিস আমার চিঠির দিকে, বুঝতে চাইছিস আজও আমি বর্ণে বর্ণে তোর প্রত্যেক মুহূর্তকে আন্দাজ করতে পেরেছি কিনা। অথবা আমার সব কথাই ভুল। কিন্তু ভুল করেও মেনে নেবার ইচ্ছেটা যে আজও রয়ে গেছে। মুখ টিপে, গালে হাত দিয়ে হাসছিস?

যাক গে হেসেই যখন ফেলেছিস, তখন বলি, গতবারের পুজোর পর কি হল? আমি তো পুরনো বন্ধুর খোঁজ পেয়ে অনেক কিছু ভেবেছিলাম। ছোটবেলার একসাথে কাটানো মুহূর্তগুলো আবার যেন বিরূতেরমত লতায় পাতায় পরম স্নেহে বেড়ে উঠেছিল। তারপর হঠাৎ আর উত্তর পাঠালি না। ভাবলাম হয়ত, তুই সেই আগের মত ভাবুক হয়ে গেছিস, আবার যদি আমরা 'ভুল' করে ফেলি; আবার যদি স্মৃতির চাদরে পড়ে টান; আবার যদি কল্পনারা নদীর স্রোত হয়ে ভিজিয়ে দেয় তোর সন্ধেবেলার আঁচল; আবার টুকরো মুহূর্তগুলো তারা হয়ে জ্বলে ওঠে জোনাকির মত নির্জন আকাশে, আর খসে পড়ে তোর চোখের সামনে তোর ইচ্ছেগুলো জানার অপেক্ষায়। কেমন হয় যদি, ফেলে আসা রাস্তাগুলোয় নতুন করে বসানো হয় ডাকবাক্স, যেখানে রাখা থাকবে তোর আমার আজ অবধি লেখা সব চিঠি; কেমন হয় যদি একদিন রোদ্দুর গলে জল হয়ে যায় একলা বারান্দায়, ছুঁয়ে যায় তোর পায়ের পাতা, সেই ঘরের দরজার কাছের দুটো চেয়ার, যেখানে একদিন বসতাম দুজনে পাশাপাশি। তুই উত্তর দিসনি বলে আমি অত শত ভাবিনি তোর মত। কিন্তু আমার মনে রয়ে গেছে সেই হলদে শাড়ি পড়া মেয়েটাকে যে দুর্গা পুজোর ভিড়েও আমাকে চিনতে পেরেছিল বহুদিন পরে। অনুসন্ধান কেন্দ্রের সামনে। দাঁড়িয়েছিলি, মুখ ভার করে তোর হারিয়ে যাওয়া বন্ধুদের খোঁজে, আমিও ছিলাম তখন সেখানে। আমি কিন্তু হারাইনি, বরং হারিয়ে যাওয়া কাউকে খুঁজে পেয়েছিলাম। ভাবিনি, তোর সাথে দেখা হয়ে যাবে কিন্তু ভাল লেগেছিল যখন হেসে বলেছিলি, 'কেমন আছিস?' আমি সেদিন উত্তর দিইনি, জানিনা তোর মনে আছে কিনা। বলেছিলাম, 'পরে একদিন বলব, যেদিন সময় আসবে...' । আজ বিকেলে ছাদে উঠে মেঘলা দুপুরের সাথে কথা বলতে বলতে সেই সময়টা ফিরে এলো। সত্যি রে! বিশ্বাস কর! একবার সাহস করে জানালার কাছে গিয়ে দাড়াস, আর হাত দুটো কোনোদিন বাড়িয়ে দিস চোখ বুজে; দেখবি তোর হাত ছুঁয়ে যাবে আমার আঙ্গুল। ভাবছিস, তাই বলে ঘটা করে চিঠি কেন? আমার যে এখনও লেখার অভ্যাস যায়নি, আর নিশ্চয় তোর পড়ার... যায়নি তো? এই তোকে যে 'চোখের বালি' দিয়েছিলাম সেটা এখনও আছে? আমার স্কুলের পয়সা বাঁচিয়ে কেনা, জানিনা তোর মনে আছে কিনা... হয়ত এখনও হলুদ মলাটের মধ্যে খুঁজলে পাবি তোকে লেখা জন্মদিনের শুভেচ্ছা। আচ্ছা, তোর সেই হারমোনিয়ামটা এখনও আছে? সময়ের সাথে বুড়িয়ে গেছে মনে হয়, কিন্তু তোর ইচ্ছে গুলো ফুরিয়ে যায়নি তো? সেই যে কলেজ থেকে ফেরার পথে রতন বাবুর ঘাটের পাঁচিলে আমার পাশে বসে গুনগুন করতিস, 'আমার বেলা যে যায়, সাঁঝবেলাতে...' ; আর রক্তিম সূর্য তখন দিনের শেষে পথ খুঁজে নিত ওপারের উঁচু বাড়ি গুলোর কিনারা ছুঁয়ে। সেই যে রে, লঞ্চের মাথা থেকে ডানপিটে ছেলের দল লাফিয়ে পড়ত জলে, মনে আছে সেই বিকেল বেলার কথা?

শর্বরীর সাথে যোগাযোগ আছে? আর কাব্য, সঞ্জীব, আশিস, মালবিকা? আমার তো মাঝে মাঝেই কথা হয়, কিন্তু মনে হল তুই দুলছুট হয়ে গেছিস। তোর কথা ওদেরও জিজ্ঞেস করেছি, কিন্তু কেউই ঠিক বলতে পারেনি। তোর নাম্বারও পাল্টে গেছিল, তাই খুঁজে খুঁজে তোর সেই কলেজের দেওয়া আইডিটা যোগাড় করলাম। আর লিখে ফেললাম যা মনে আসে, ঠিক প্রথম প্রথম যেমন তোকে চিঠি লিখতাম। এতক্ষণে নিশ্চয় বুঝে গেছিস, এটা কোনও না লেখা প্রেম পত্র নয়, বরং অনেকগুলো কথা যেগুলো সময়ের সরণিতে চলতে চলতেও বলা হয়ে ওঠেনি। আচ্ছা, তোদের সেই বাড়ির ঠাকুর দালানটা আছে? শেষ বার গেছিলাম যখন তোদের বাড়ি যাওয়া হয়নি, ওইটাই শেষ দেখা। নাকি চলে গেছিস শহুরে ঠিকানা পাল্টে? তোর মনে আছে, তুই যেবার আমায় নতুন পাঞ্জাবি কিনে দিয়েছিলি; সেই যে রে, শেষের আগের বারের পুজোতে। নতুন শাড়ি পড়ে চোখ লাল করে বসেছিলি দালানের এক ধারে মুখ গোমরা করে, তোর সাথে বেরবো না বলেছিলাম বলে। কিম্বা সেই ধুনুচি নাচের আবদার? আঙ্গুল পুড়েছিল আমার , কারণ আগুন ছিল সেই মেয়েটার চোখে, যে দালানের থাম ধরে বারে বারে লুকিয়ে দেখেছিল আমাকে। বাদ দে এসব কথা, তুই নিশ্চয় লজ্জা পাচ্ছিস এসব পড়ে? কি তাই তো? গাল তোর আজও লাল হয় লজ্জা পেলে, এখনও মুখ লুকিয়ে ফেলিস ওড়নার পেছনে?

এই একটা প্রশ্ন করব?কিছু মনে করবি না তো? সত্যি করে বল... তুই এখনও কাঁদিস? কোনোদিনও তো মুখ ফুটে নিজের কষ্টের কথা বললি না; কোনোদিনও বুঝতে দিলি না তোর মনের রঙ, যা অনেকটা আঝোর কান্নার পর রামধনুর মত। না তোকে দুঃখ দেবার জন্য বলছি না, আমাকে ভুল ভাবিস না। নেহাত বন্ধুর মত জিজ্ঞেস করছি। আমার কথা মনে পড়ে?আমার কিন্তু তোর কথা বেশ মনে পড়ে, অকপটেই বলতে চাই। একসাথে নাই বা চলতে পারলাম, কিন্তু সময়গুলো তো দুজনের ডায়েরিতেই রয়ে গেছে। নোনাজলে পায়ের ছাপগুলো মুছে যেতে পারে, কিন্তু আজও যদি ফিরে যাস সেই বালুচরে, ঝিনুক গুলো হয়ত খুঁজে পাবি।

ভাবছিস এতগুলো কথার ছুতোয় কেন তোকে ফিরিয়ে আনলাম পুরনো ঠিকানায়? কারণ জানতে চাস? আসলে অনেকদিন বাদে, সেই মেঘলা বিকেল আবার এসেছিল আমার বাড়ির ছাদে। হোক না অন্য জীবন, অন্য মনের দূরত্ব, কিন্তু চায়ের কাপ হাতে যখন ছাদে এসে দাঁড়ালাম তখন দেখলাম কানায় কানায় ভরে গেছে সবুজ। পশ্চিম দিকে তখন আলো নিভু নিভু অন্ধকারে। কালবৈশাখী দেখতেই মনে পড়ে গেল সেই দিনটার কথা যেদিন মেঘের থেকেও গভীর ছিল তোর চোখ, বন্য ছিল তোর ঠোঁটের অস্ফুট শব্দ; মেঘালি হাওয়ায় ওড়না যখন স্রোতস্বিনী হয়ে গেছে তখন ধীর পায়ে হারিয়ে গেছিলি অন্ধকারে, একবারেও পিছনে ফিরে দেখিস নি, শুধু রেখে গেছিলি ঝোড়ও হাওয়া। ভিজে গেছিল আমার কবিতার খাতা, চৈত্রের ধুলো মেখে উড়ে গেছিল উজানে। আমি শুধু মনে মনে বলেছিলাম, "যত দূরে, যেখানেই থাকিস, আমরা দুজন তো এখনও এক আকাশের নিচে" । নামহীন সেই বিকেলের ঘনঘটা যখন ফিরে আসছিল আমার জানালার আরশিতে তখন ভাবলাম, যদি তার কয়েক ফোঁটা বৃষ্টির জল পাঠিয়ে দিতে পারি, তোর কাছে;যদি পাঠিয়ে দিতে পারি সেই ঝোড়ও হাওয়া, যাতে লেগে থাকবে সোঁদা মাটির গন্ধ; যদি ভিজিয়ে দিতে পারি তোর পা, মুক্তির সবুজ ঘাসে। থাকবি তো আমার সাথে তাহলে বন্ধু হয়ে?

ভাল থাকিস।আর কোনোদিনও সুযোগ পেলে উত্তর দিস। কারণ তুই যেমন চিঠি টা পড়তে পড়তে শেষ মুহূর্ত অবধি আমাকে খুঁজে গেছিস, হয়তও অন্য কেউও সেই অপেক্ষায় থাকে। সুযোগ পেলে একমুঠো হাসি পাঠাস খামে ভরে। আমার ডায়েরির ভাঁজে রেখে দেব, স্মৃতির চাদরে মুড়ে। কে জানে, আবার যদি কোনোদিন উড়ো চিঠি লেখার ইচ্ছে হয়, তাহলে খুলে নেব সেই খাম আর মুক্তর মত ছড়িয়ে দেব অক্ষর হয়ে পাতায় পাতায়।

ধন্যবাদান্তে,
সম্পাদক-নবপত্রিকা

1 comment:

  1. (( S ))... BAR ...BAR ! JJAN TE CHASS ! K - MON ASI ??? jjAMITIK / GANITIK king VA HISAB-RAKKONE !! KORIS ONEK BARTO KHUJJA-KHUJI ,??? -------------- ZOBAB ... SHUNN ! ABAR BOLI ! --------------------- AMI ----- ATKA PORE ... ASI ? AJOB MAYER --- VARA -JJALE ! * MAKOR-SHAR * AJOB - JJALER TIK MODDO KHANE !! ONAYASE --- BOSROHIN ** SRUTTONnAShI ** HOYE !! thaR TORE -APONARE - BOLI ! AJOB LILA KHALA - SOB E THAR E !! NIZE K ABAR SAMLA BUjjLI ---------- ETI ... TUR ******* PRITI .

    ReplyDelete