এই প্রবন্ধের প্রথম কয়েকটা শব্দের মধ্যেই রয়েছে আমার যাযাবর পথ চলার প্রথম "মাইলস্টোনের" নিশান। লেখা শুরু করার আগেই বলতে চাই, আজকের লেখাটি ভ্রমণ ও ভোজন- রসিক দুই ধরনের মানুষের জন্য। এখানে ঘুরতে এসে অন্তত আমার সেইরকমই অনুভূতি হয়েছে। ভূমিকাতে সময় ব্যয় না করে তাই সোজাসুজি চলে আসতে চাই, গল্পে- আড্ডায়। হ্যাঁ, সেইটাই তো আমরা, বাঙালীদের বৈশিষ্ট!
এবার চলে আসি আমার অভিজ্ঞতা সম্পর্কে। জায়গাটা প্রায় কয়েক মাইল জুড়ে অবস্থিত। দূর থেকে বিস্তৃত সবুজালি ক্ষেত, কর্মীদের ব্যস্ততা, জলসেচের সরঞ্জাম, নিরন্তর ট্র্যাক্টরের আনাগোনা বেশ চোখে পড়ার মত। প্রবেশের এক প্রান্তে শিশুদের জন্য একটি বাগান আছে (যেখানে বড়দের যাওয়া একদম নিষেধ)। এই বাগানে আগত সমস্ত ছানাপোনাদের ঘোড়ায় চাপিয়ে ঘোরানো হয়। তাই শিশুদের উৎসাহের অন্ত নেই। টিকিট কেটে ভিতরে ঢুকতেই শোনা গেল, স্থানীয় শিল্পীদের গান যারা মঞ্চ থেকে আগত পর্যটকদের সাদর অভ্যর্থনা জানাচ্ছে।
প্রশ্ন এটাই , "ঘুরব কি করে এত্ত বড় জায়গা?" দেখতে দেখতে এসে হাজির একটা প্রকান্ড ট্রাক্টর, যা টেনে নিয়ে যাবে খড় বোঝাই একটা বগিকে। সেই বগিতে সারি সারি খড়ের আসন, যাত্রীদের জন্য। চারিদিক খোলা। আকাশে তখন মিঠে রোদ্দুর।
কুবেরের খনিতেও বুঝি এত রং নেই, যা এই বাগানে আছে। তাই কোনটা ছেড়ে কোনটা নেবও, এটা ভাবতে গেলে শুধুই সময় নষ্ট। নানান প্রজাতির আপেল আছে এখানে। কোনওটার সারিতে গেলে পাওয়া যাবে মধুর সুমিষ্ট গন্ধ, কোথাও বা পাওয়া যাবে ভারতীয় আপেলের স্বাদ। তবে এসবের মাঝে একবার চোখ বুলিয়ে নিতে হবে প্রত্যেক বাগানের "বিশেষ কর্মীদের তথ্য সম্পর্কে"। বিশেষ এই কারণে যে, তারা আকারে ছোট, তবে এই বাগানের সবচেয়ে প্রাচীন বাসিন্দা। মৌমাছি। রীতিমত আদর যত্ন করে তাদের রাখা হয় এখানে, পরাগসন্ধানের জন্য।
আপালের বাগান থেকে এবার এগোলাম সূর্যমুখী ফুলের বাগানে। দূর থেকে দেখলে কোনও সাম্প্রতিক কালের ফিল্মি দৃশ্যের কথা নিশ্চয় মনে পড়বে। সেই বাগানের মাঝখানে একটা ফটো হয়তও করে তুলতে আপানার মনের মানুষকে অনেক রোম্যান্টিক। চারদিকের শুধু হলুদ ফুলের সারি। এই বাগানের আসে পাশে আছে কুমড়ো, পালং শাক ও অন্যান্য সব্জির ক্ষেত। মানুষের উৎসাহ সেখানেও কম নয়।
এরপর খুঁজতে লাগলাম ভুট্টার(Sweet Corn) ক্ষেত, কারণ সেটা আমার ভীষণ প্রিয়। কিন্তু বাগানে এখনও ভুট্টা পরিপক্ক না হওয়ায় যাওয়া যায়নি। এরপর এগোলাম টোম্যাটো, ক্যাপ্সিকাম, বিন ও শীতকালীন নানা সব্জির বাগানের দিকে। মাঠের মাঝখানে আছে গবেষণা কেন্দ্র, যেখানে বিশেষ পদ্ধতিতে চারাগাছ বানানো হয়।
এরপর খুঁজতে লাগলাম ভুট্টার(Sweet Corn) ক্ষেত, কারণ সেটা আমার ভীষণ প্রিয়। কিন্তু বাগানে এখনও ভুট্টা পরিপক্ক না হওয়ায় যাওয়া যায়নি। এরপর এগোলাম টোম্যাটো, ক্যাপ্সিকাম, বিন ও শীতকালীন নানা সব্জির বাগানের দিকে। মাঠের মাঝখানে আছে গবেষণা কেন্দ্র, যেখানে বিশেষ পদ্ধতিতে চারাগাছ বানানো হয়।
সবশেষে গেলাম "পিচ"-এর বাগানে। অনেকে হয়ত এই ফলের নাম শুনেছে, তাও বলে রাখি। এমনি দেখে এই ফলকে অনেকে আপেল বলে ভুল করতে পারে। কিন্তু আপেলের থেকে এই ফল এক্কেবারে আলাদা। ভীষণ নরম ও মুখে দিলে অনায়াসে গলে যায়। একটু মিষ্টি - একটু টক। আর মাঝে একটা বীজ। সেটা বাদ দিয়ে পুরো ফলটাই খেয়ে নেওয়া যায়, মনকে তৃপ্ত করার জন্য।
নানান রকমের ফল দেখতে দেখতে কেটে গেল প্রায় সারাদিন। যখন এসে পৌঁছলাম আরেক প্রান্তে তখন দেখা হল এই খামারের বেশ কিছু "দুষ্টু মিষ্টি" অতিথির সাথে।তারা খুব একটা কথা বলতে অভ্যস্ত নয়, তবে কাছে গেলে খুশি হয়ে নিশ্চয় আদর চেয়ে নেবে। অথবা পলকে লজ্জায় পালিয়ে যাবে ছোট্ট ঘরের ভেতর। সেই সব অতিথিদের ছবি রইল এই প্রবন্ধের শেষে।
ওয়েবসাইট সম্পর্কিত তথ্য রইল এই প্রকাশনার সাথে। www.alstedefarms.com।
আপনাদের এরকম কোনও ভ্রমন অভিজ্ঞতা থাকলে অবশ্যই লিখে পাঠান আমাদের ডাকবাক্সে (info.amarbanglavasa@gmail.com) ছবি সহ।
আপনাদের এরকম কোনও ভ্রমন অভিজ্ঞতা থাকলে অবশ্যই লিখে পাঠান আমাদের ডাকবাক্সে (info.amarbanglavasa@gmail.com) ছবি সহ।
ধন্যবাদান্তে,
সম্পাদক-নবপত্রিকা
সম্পাদক-নবপত্রিকা
No comments:
Post a Comment